Shri Ajit Nath Roychowdhury, a member of the zamindar family of Taki, a renowned physician himself, was an initiated disciple of Swami Shivananda ji Maharaj (Mahapurush Maharaj). It once came to his mind that he might be able to initiate a centre of the Ramakrishna Order somewhere at his native place or its vicinity. Accordingly, he placed his prayer to Mahapurush Maharaj who in turn deputed three persons, dedicated to work on the ideals of the holy trio, at a meeting held at Shri Roychowdhury’s residence at Kolkata for this very purpose on 1st September 1931. It may be mentioned here that all the three gentlemen took to monastic life later. Thus emerged an organisation christened “Sri Ramakrishna Vivekananda Sangha”. On the way to Hasnabad station, almost at the centre of Taki town, a hospital was set up and by its side, one of the temple, dedicated to Lord Shiva. The hospital was named “Shivananda Sevashram”. The Shiva temple still stands, a witness to yesteryears. A hutment was built adjacent to the hospital for workers and visitors. It hosted a kitchen, a waiting area for visitors and was also used to hold discourses on the life and teachings of Sri Ramakrishna, Holy Mother Sarada Devi and Swami Vivekananda.
Couple of existing schools by the road from Taki to the nearby town of Hasnabad came under the aegis of the newly founded organisation and consequently, Taki Ramakrishna Vivekananda Upper Primary School emerged with six teachers. The lives of the holy trio began to be presented before the residents of Taki in the form of slide shows with the help of magic lanterns (a tool in those days). Commuting to Kolkata (at that time, Calcutta) took about five hours or so by the slow chugging trains of the Martin Burn narrow gauge railway from Hasnabad via Barasat. Electricity and metalled roads were considered beyond reach.
The search for a permanent site for the Ashram brought the scouting devotees to a larger plot of marsh land filled with wild plants and weeds lying unusable of whi he was the owner Shri Ramakrishna Kundu arranged to donate for the cause, even erecting a structure for the school to function. Starting with the school, the Ashram activities begun to be shifted there. On the western end of this plot, a small temple of Sri Ramakrishna was constructed. Taking eager initiative, Shri Kundu purchased further land for the Ashram. Another member of the zamindar family of Taki, Shri Sanat Roychowdhury donated some agricultural land in the name of the Ashram in the district of Khulna (now in Bangladesh) with the objective of meeting the needs of the Ashram by selling the agricultural yield from this land. Under his patronage, two vocational schools – one for boys and the other for girls began where training was imparted in areas like weaving on handloom, soap manufacturing and agricultural work. Another primary school in the neighbouring village of Jalalpur also came under the management of the organisation. A small public library began to function.
In 1938, an appeal was made to the headquarters of the Ramakrishna Order (Belur Math) to accept the unit as a branch centre of Ramakrishna Mission which was acceded to by the then General Secretary Swami Virajananda ji Maharaj. It came to be known as Taki Ramakrishna Mission Ashrama. The boys’ school was named Taki Ramakrishna Mission Upper Primary School while the girls’ school was known as Taki Ramakrishna Mission Sarada Vidyapith. The first secretary appointed by Belur Math at the Takl centre was Swami Abhinnananda (Shri Hari Charan Bandopadhyay in pre-monastic life).
By 1943, the Ramakrishna Mission school was elevated to a middle english school (upto 8th standard) and thereafter to ‘extended’ middle english school. The school later received recognition upto the 10th standard from the State Board in 1954. Later, in 1966, it was expanded to high school. A hostel for residential students was established with the aim of bringing back the touch of the oriental gurukul system where students would stay and lead a disciplined routine at the Ashrama whereby good values would be inculcated amongst them enabling the building up of character, an aim sought by Swami Vivekananda for the youth of the country.
The hospital Shivananda Sevashram (mentioned earlier) had been handed over to Ramakrishna Mission in 1937 only to be handed back to Shri Ajit Nath Roychowdhury a few years later (around 1946). It stands at present as a government run rural hospital. A homeopathic dispensary took shape around 1939 in the south-east corner of the Ashrama land in a tile-roofed shelter erected for the purpose. Medicines came in as donation and treatment of patients was done by a renowned physician of the locality Shri Abhay Charan Basu till Swami Dayaghanananda, a member of the Taki zamindar family in his pre-monastic life, took over.
Spiritual activities used to be held regularly by this time with the birth anniversary celebrations of Sri Ramakrishna, Holy Mother Sarada Devi and Swami Vivekananda being held regularly along with an annual general celebration, sessions of devotional songs (kirtan), devotee meetings and dramas on the epics Ramayana and Mahabharata and spiritual themes performed by the students of the school as well as external groups. With this, the number of devotees gathering regularly saw a steady rise. The space in the existing temple was found to be inadequate. In 1965, the foundation of a new temple was laid by Swami Vireshwarananda ji Maharaj, then general secretary of Ramakrishna Mission. Donations trickled in and construction went on at a slow pace parallely with other activities. In 1978, Swami Vireshwarananda ji Maharaj, who was by then the President of the Ramakrishna Order, consecrated the temple in the name of Sri Ramakrishna.
The Ashrama saw notable relief work during a famine occuring in the Sunderbans area in 1952 and thereafter amongst refugees pouring into Hasnabad and Taki areas during the liberation struggle of Bangladesh during 1971.
Later Secretaries Swami Jatindrananda ji and Swami Krishnananda ji continued expanding the infrastructural facilities including preparation of the playground for the school and beautification of the Ashrama campus including digging of a tank in the campus and laying out flower gardens. With the passage of time, the work of the Ashrama expanding in all areas under its gamut, the Taki centre of Ramakrishna Mission stands today in this old cultural town, now bordering a foreign nation Bangladesh, and also the gateway to the Sunderbans as an organisation of immense repute making a considerable difference in the lives of the people who have come under its umbrella.
টাকী রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত
ভারত ভূখন্ডের তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শেষ দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ঐতিহ্যশালী প্রাচীন নগরী টাকী ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের মাঝে স্রোতস্বিনী ইছামতী নদীর উপকূলে সুন্দরবনের প্রবেশ দ্বার বলে পরিচিত টাকী শহর। ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ-পরিকর শ্রীমৎ স্বামী শিবানন্দজী মহারাজের আশীর্বাদপুষ্ট দীক্ষিত সন্তান টাকীর জমিদার স্বনামধন্য ডাঃ অজিতনাথ রায়চৌধুরী মহাশয় টাকীতে একটি আশ্রম স্থাপন মানসে তাঁর কলকাতাস্থ বাড়িতে একটি সভা আয়োজন করেন ১৯৩১ সালে ১লা সেপ্টেম্বর। ডাঃ অজিতনাথ রায়চৌধুরীর অনুরোধে পূজনীয় শিবানন্দজী মহারাজ তিন জন ভক্ত কর্মীকে এই সভায় পাঠান। তাঁরা হলেন — হরিচরণ বন্দোপাধ্যায় পরে স্বামী অভিন্নানন্দ, গৌরিচরণ সেন পরে স্বামী নিরন্তরানন্দ ও জানকীনাথ মুখোপাধ্যায় পরে জানকী মহারাজ। ওই সভায় আরো কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষের উপস্থিতিতে “টাকী রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সঙ্ঘ” প্রতিষ্ঠিত হয় যার পরিণত রূপ হল আজকের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, টাকী।
‘শিবজ্ঞানে জীবসেবা’র আদর্শকে কার্যে রূপায়িত করতে কয়েকজন কৃপাধন্য সংসারবন্ধনমুক্ত ব্যক্তি ও গৃহীভক্তদের সহায়তায় সুন্দরবনের গরীব কৃষিজীবী, ধীবর, হরিজন ও আদিবাসী শ্রেণীর পিছিয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষ যাদের অন্নসংস্থান করতে গিয়ে জলে-স্থলে প্রতি মুহূর্তে সম্মুখীন হতে হয় মৃত্যুর মুখোমুখি, তাদের সেবায় স্থাপিত হয় ‘শিবানন্দ সেবাশ্রম’ নামে একটি হাসপাতাল ও ‘শিবানন্দ স্মৃতি’ নামে একটি মন্দির। ‘শিবানন্দ সেবাশ্রম’ ও ‘শিবানন্দ স্মৃতি’ নামাঙ্কিত (ফলক সম্বলিত) বাড়ী এবং মন্দির আজও অতীতের স্মৃতি বহন করছে। এই পর্বে অজিত বাবুদের সঙ্গে যুক্ত হন জমিদার বংশের বড় তরফের সনৎ কুমার রায় চৌধুরী পরবর্তীতে পরিচিত হন স্বামী দয়াঘণানন্দজী নামে যিনি আশ্রমের দীর্ঘকাল সম্পাদকের দায়িত্বভার সামলেছেন ১৯৪৬ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত।
সঙ্ঘের কর্মী ও ভক্তবৃন্দ উপরোক্ত সেবা কাজের সঙ্গে চরিত্রবান মানুষ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষা বিস্তারেও মনোনিবেশ করেন এবং স্থাপন করেন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়। রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সঙ্ঘের সেবাকার্য যত বাড়তে লাগলো তত স্থায়ী প্রশস্ত মনোরম জায়গার প্রয়োজনীয়তা অনুভব হল। টাকীর কয়েকজন মহানুভব ব্যক্তির সহায়তায় বর্তমান জায়গা সংগ্রহ করে প্রার্থনাগৃহ সহ স্কুল স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৩৯ সালে দাতব্য হোমিও চিকিৎসা শুরু হয়। প্রসঙ্গত পূজনীয় স্বামী দয়াঘণানন্দজী মহারাজের চিকিৎসা কিংবদন্তী পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যা আজও মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
‘রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সঙ্ঘে’র কাজ কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠ ১৯৩৮ সালে এই সংঘকে তাদের অনুমোদিত শাখা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং সঙ্ঘের নতুন নামকরণ হয় ‘রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম’, টাকী। বিদ্যালয়ের দুটি বিভাগের মধ্যে বালকদের বিভাগটির নাম হল ‘টাকী রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এবং বালিকা বিভাগের নাম হয় ‘রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠ’।
ছোট মন্দিরে সকল ভক্তদের স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় বড় মন্দিরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ভক্তদের উৎসাহ ও সহায়তায় এবং স্বামী দয়াঘণানন্দজীর আগ্রহে ১৯৬৫ সালে তৎকালীন সংঘাধ্যক্ষ স্বামী বীরেশ্বরানন্দজী মহারাজ বর্তমান মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে শ্রীমৎ স্বামী বীরেশ্বরানান্দজী মহারাজ বিশিষ্ট সন্ন্যাসীদের উপস্থিতিতে মন্দিরটির উদ্বোধন করেন।
আর্ত, দরিদ্র ও পীড়িত মানুষের সেবায় ত্রাণকার্য মাঝে মধ্যেই চলত। পূজনীয় নির্বেদানন্দজী মহারাজ বহু কষ্ট সহ্য করে বেলুড় মঠ থেকে ত্রাণ সামগ্রী এনে বহুবার ত্রাণকার্য করে গেছেন। পরবর্তীকালে ১৯৫২ সালে সুন্দরবনে দুর্ভিক্ষের সময়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে আগত হাজার হাজার শরণার্থীদের সেবায়, ১৯৮৮ সালে সুন্দরবনে নজিরবিহীন ঝড়ঝঞ্ঝা কবলিত মানুষের সেবায় এবং ২০০৯ সালে আয়লা-দুর্গত মানুষের সেবায় ব্যাপক আকারে দীর্ঘদিন ধরে এই আশ্রমের দ্বারা ত্রাণকার্য পরিচালিত হয়। দরিদ্রনারায়ণদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে নিয়মিত কম্বল ও বস্ত্রাদি বিতরণ করা হয়ে থাকে। স্বনির্ভর প্রকল্পের মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শ্রমিক ও জেলেদের মধ্যে ভ্যান-রিক্সা, মাছধরার জাল এবং নৌকা বিতরণ করা হয়ে থাকে।
মন্দিরে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় ছাত্রাবাসের ছাত্রসহ গৃহীভক্তদের উপস্থিতিতে বৈদিক মন্ত্র্পাঠ, ভজন, আরতি ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। ঠাকুর-মা-স্বামীজীসহ আন্যান্য আধ্যাত্মিক আচার্য্যের জন্মতিথিও পালন করা হয় শ্রদ্ধার সঙ্গে। এছাড়াও একাদশীতে রামনাম, দুর্গামহাষ্টমী, গুরুপূর্ণীমা, যুবসম্মেলন, ভক্তসম্মেলন ও সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে নিয়মিত ধর্মালোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সহযোগে প্রতি বৎসর ২ দিন ব্যাপী বার্ষিক উৎসব পালন করা হয়। সাধারণ পাঠক, ভক্ত ও ছাত্রদের জন্য একটি লাইব্রেরী রয়েছে। আর রয়েছে একটি ছাত্রাবাস, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ছাত্রদের মধ্যে নৈতিক, আধ্যাত্মিক, বৌদ্ধিক এবং চারিত্রিক উন্নয়নের সঙ্গে স্বদেশপ্রেমের শিক্ষাও দেওয়া হয়।
এছাড়াও বেলুড় মঠের নির্দেশে এই আশ্রমের তত্ত্বাবধানে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় ৩৩টি ভাব প্রচার কেন্দ্রের মাধ্যমে সারা বছর ধরে নানাবিধ সেবা্, আত্মনির্ভরশীলতা, চরিত্রগঠন ও উন্নয়নমূলক কর্মধারা চলে। ঐ সকল এলাকায় ‘বিবেকানন্দ পাঠশালা’ নামে অবৈতনিক শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে অনগ্রসর শিশুদের মধ্যে শিক্ষা-প্রসার কার্য চলছে নিয়মিতভাবে।
সুদীর্ঘ ৮৮ বৎসর ব্যাপী শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে স্বামী বিবেকানন্দের ঈপ্সীত ‘এক নূতন ভারত’ গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে সেবাব্রতকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, টাকী।